পরকীয়ার ফাঁদ থেকে রেহাই
- ভাগ্যফল
- Feb 15
- 2 min read
সোমা দত্ত খারে
(সি.এ (ইন্টার), স্বর্ণমুকুট, কে.পি মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী,
সনাতন, কৃষ্ণমূর্তি, হস্তরেখাবিদ, সংখ্যাতত্ত্ববিদ ও বাস্তুবিদ)

আগেকার দিনেও পরকীয়ার প্রচলন ছিল যার প্রভাব আমরা রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্রের বিভিন্ন উপন্যাসে দেখতে পাই। কিন্তু তখনকার দিনে এটার বহিপ্রকাশ কম ছিল। এখনকার দিনে পরকীয়ার প্রচলন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটার অন্যতম কারণ হল আজকের দিনে বহু নারী আর্থিকভাবে স্বাধীন, তারা এখন বাইরের জগতে পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলছে। এছাড়াও সোস্যাল মিডিয়া, ইন্টারনেট এর জন্য অনেকটা দায়ী।

আমাদের সমাজ এখনও পর্যন্ত রক্ষণশীল। যদিও পাশ্চাত্যের অনেক কিছুই আমরা বরণ করে নিয়েছি, কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিবাহিত জীবনের বাইরে কোনো সম্পর্ককে আমাদের সমাজ একটু অন্য চোখেই দেখে থাকে। কাজেই কোনো বিবাহের আগে জ্যোতিষীকে দিয়ে অবশ্যই বিচার করা উচিত সে জাতক বা জাতিকার পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে কি নেই।

এই প্রসঙ্গে জেনে নেওয়া প্রয়োজন কোন গ্রহ বা কোন ভাব পরকীয়ার জন্য দায়ী। কোন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার জন্য আমাদের অন্তরাত্মা বা মন দায়ী। চন্দ্র মনের কারক গ্রহ। শুক্র ভালোবাসা বা প্রেমজ সম্পর্কের কারক গ্রহ। রাহুকে ম্লেচ্ছ গ্রহ বলা হয়ে থাকে। রাহুর কারণে কোনো জাতক বা জাতিকা সমাজের সমস্ত নিয়ম, বাধা-বন্ধন ভেঙে ফেলতে পারে। মঙ্গলের জন্য আবেগ বা জেদ, রাগ হয়ে থাকে। কেতু কোনো কিছু গুপ্ত নির্দেশ করে।

তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, মোটামুটি এই চারটি গ্রহই দায়ী পরকীয়ার জন্য। পঞ্চম ভাব থেকে আমরা প্রেমের বিচার করে থাকি। তৃতীয়, সপ্তম ও একাদশ ভাবকে কাম, ত্রিকোণ বা ইচ্ছাপূরণের ভাব বলা হয়ে থাকে। দ্বাদশ ভাব থেকে শয্যাসুখ বিচার করা হয়। কাজেই তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, একাদশ ও দ্বাদশ ভাব—এই ভাবস্থ সকল গ্রহ এবং চন্দ্র, রাহু, কেতু, মঙ্গল-এর অবস্থান দেখে নির্দেশ পাওয়া যায় সেই জাতক বা জাতিকার কোনো গুপ্ত সম্পর্ক আছে কি না।

যেকোনো গুপ্ত সম্পর্ককে চন্দ্র বা আমাদের মন শাসন করে থাকে। বৃহস্পতি জ্ঞানের কারক গ্রহ এবং বুদ্ধি দেয় বুধ। যদি বুধ রাশি বা চন্দ্রের পঞ্চম বা নবমে থাকে তখন সেই বুদ্ধি মনের ইচ্ছাকে কার্যকরী করতে সাহায্য করে। কিন্তু বুধ বৃহস্পতির সাপেক্ষ পঞ্চম বা নবমে থাকে তাহলে সেই জাতক বা জাতিকা ধর্মের দিকে চালিত হয়। সেখানে বুধের সঙ্গে বৃহস্পতি কোনো ভাবে সম্পর্কে রয়েছে—সেই জাতক বা জাতিকা কোনোরকম অন্যায় বা কুরুচিকর কাজ করতে পারে না।

শুক্রকে প্রেমের গ্রহ বলা হয়ে থাকে। যদি কারোর কোষ্ঠীতেশুক্র মঙ্গল বা রাহুর সঙ্গে থাকে তাহলে সেই জাতক বা জাতিকার পরকীয়ায় লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তৃতীয়, সপ্তম ও একাদশ ভাবকে কাম ত্রিকোণ বলা হয়ে থাকে। এই সমস্ত ভাবে যদি কোনো অশুভ গ্রহ থাকে তাহলে পরকীয়া হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে যায়। তৃতীয় ভাব থেকে সাহসের বিচার করা হয়ে থাকে।

পরকীয়া করার জন্য সাহসের প্রয়োজন। কাজেই রাহু বা মঙ্গল যুক্ত তৃতীয় ভাব পরকীয়া করতে সাহায্য করে। অনেক সময় পঞ্চম ভাবে যদি কেতু বা মঙ্গল থাকে এবং কোনওভাবে শুক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে তা পরকীয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পরকীয়ায় তখনই আসক্ত হয়ে পড়ে যখন সেই গ্রহের দশা বা অন্তর্দশা চলে।

যেমন একজনের জন্মকোষ্ঠীতে পঞ্চম ভাবে কেতু, শুক্রের নক্ষত্রে এবং সাবলর্ড রাহু। সেই ব্যক্তি চোদ্দ বছর সুখী দাম্পত্য জীবনযাপন করেছেন। পরে ঠিক যখন কেতুর দশা শুরু হল তখন একটি তার প্রায় অর্ধেক বয়সের মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।

ভারতবর্ষে দিন দিন এই সম্পর্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর নানা কারণ আছে। যেমন বাল্য বিবাহের কারণে কখনো দাম্পত্য জীবন অবসাদগ্রস্ত হয়ে ওঠে। কখনো কখনো মনের মিল না থাকলে, কেউ কেউ অন্য পুরুষ বা নারীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। পার্টনারের সঙ্গে শারীরিক সমস্যা, মতবিরোধ, চাকরিতে উন্নতি ইত্যাদি থাকে কারণ।

কিন্তু একবার ভেবে দেখা দরকার যে এই পরকীয়া শুধু যে কুরুচিকর বা অস্বস্তির কারণ তাই নয়, এর জন্য পরিবার নষ্ট হয়ে যায়। ছেলেমেয়ের জীবন ভীষণভাবে ছন্নছাড়া হয়ে যায়। সমাজে স্থান হয় অচ্ছুতের মতো।

এখনও আমাদের সমাজব্যবস্থা এতটা অগ্রসর হয়নি। আমাদের সমাজ রক্ষণশীল। আগে থেকে প্রতিকার নিন বা জ্যোতিষীর পরামর্শ নিন যাতে এইরকম সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসে মাথা উঁচু করে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন বেছে নিয়ে পারেন। যাতে সন্তানের সামনে মাথা উঁচু থাকে।

