কোন রাশির জাতক-জাতিকাপ্রেমিক প্রেমিকা হিসাবে কেমন?
- ভাগ্যফল
- Apr 18
- 4 min read
দেবীশ্রী
(জ্যোতিষ, তন্ত্র, বাস্তু বিশেষজ্ঞা,আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্না)

আমাদের সকলের মনের কারক গ্রহ হল চন্দ্র। আমাদের জন্মরাশি নির্দেশ করে চন্দ্র। আমাদের জন্মছকে চন্দ্র যে ঘরে অবস্থান করছে সেই ঘরই রাশি নির্দেশ করে। জন্মছকে চন্দ্র যে রাশির ঘরে অবস্থান করে সেটিই জাতক-জাতিকার রাশি। যেমন, জন্মছকে চন্দ্র মেষ রাশির ঘরে অবস্থান করলে জাতকের মেষ রাশি, চন্দ্র বৃষ রাশির ঘরে অবস্থান করলে জাতকের বৃষ রাশি, ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রত্যেক রাশির জাতক বা জাতিকার মন, মানসিকতা, স্বভাব, ব্যবহারকে প্রভাবিত করে সেই রাশির অধিপতি গ্রহ। তাই, কোনো জাতক জাতিকার রাশি জানা থাকলে তার মনের খবর কিছুটা হলেও আমরা জানতে পারি।

একজন মানুষের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা, স্বভাব, মন-মানসিকতা, সব কিছুই তার রাশি থেকে আমরা জানতে পারি। একজন মানুষ প্রেমিক-প্রেমিকা হিসাবে কেমন সেটাও আমরা তার নিজস্ব জন্মরাশি থেকে জানতে পারি। সনাতন জ্যোতিষ শাস্ত্র অনেক কিছুই আমাদের জানিয়ে দেয়। তবে একজন জাতক-জাতিকার সম্বন্ধে বিশ ভাবে, বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য তার নিজস্ব জন্মছক খুব ভালো করে বিচার করে দেখা প্রয়োজন। একজন মানুষকে সঠিক ভাবে জানতে পারা খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। একজন মানুষের ব্যবহার, কথাবার্তা, চাল চলন দেখে তার সম্বন্ধে আমরা মনে মনে একটা ধারণা করে ফেলি। কিন্তু সেই ধারণা ভুলও প্রমাণিত হতে পারে। মানুষ চেনা এত সহজ ব্যাপার নয়। ঠকে যাওয়ার পর, আঘাত পাওয়ার পর আমাদের ধারণা ভেঙ্গে যায়, আমাদের মন ভেঙ্গে যায়। এমনকী সারা জীবন এক সাথে কাটিয়ে দেওয়ার পরেও পাশের মানুষটিকে আমরা সবসময় চিনে উঠতে পারি না। সবার ক্ষেত্রে জীবনের সব হিসেব মেলে না। এই ক্ষেত্রে জ্যোতিষ শাস্ত্র আমাদের মানুষ চিনতে সাহায্য করে। আজকাল বেশির ভাগ মানুষই মুখোশ পরে থাকে। তাই কল্পনার জগতে না থেকে কোনো সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনার নির্বাচিত মানুষটির সম্বন্ধে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন। একজন ভালো জ্যোতিষীর সাহায্যে তার জন্মছক বিচার করিয়ে তার সম্পর্কে সব কিছু জেনে নিন। আপনার সঙ্গে তার সম্পর্কের পরিণতিটাও জেনে নিন। এর ফলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা, মন ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। সম্পর্কে জড়াবার আগে আপনার নিজের এবং আপনার নির্বাচিত মানুষটির জন্মছক বিচার করে দেখা অত্যন্ত প্রয়োজন।

এখন সাধারণভাবে আলোচনা করব কোন রাশির জাতক-জাতিকা প্রেমিক-প্রেমিকা হিসাবে কেমন। এটি খুবই সাধারণ, খুবই প্রাথমিক একটি আলোচনা। বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য দুজনের জন্মছক বিচার করে দেখা প্রয়োজন।
মেষ রাশি : মেষ রাশির অধিপতি গ্রহ মঙ্গল। মেষ রাশির জাতক জাতিকারা একটু জেদী, সাহসী এবং স্পষ্টবাদী হয়। মনের ভেতর ভালোবাসা লুকোনো থাকে, সহজে প্রকাশ করে না। বাইরে থেকে দেখলে খুব কঠোর প্রকৃতির মানুষ মনে হয়।
বৃষ রাশি : বৃষ রাশির অধিপতি গ্রহ শুক্র। বৃষ রাশির জাতক জাতিকারা সৌখিন, প্রেমের পূজারী, বিলাসিতা প্রিয় হয়। কথাবার্তায় মিষ্টতা থাকে। রুচিশীল এবং ভালো মনের মানুষ হয়। এরা সৌন্দর্য প্রিয় হয়।
মিথুন রাশি : মিথুন রাশির অধিপতি গ্রহ বুধ। মিথুন রাশির জাতক জাতিকার মধ্যে একটা শিশুসুলভ আচরণ থাকে। কথাবার্তা অত্যন্ত সহজ সরল। অধিক বয়স পর্যন্ত ছেলেমানুষী স্বভাব থেকে যায়। এরা স্নেহ, মমতা, ভালোবাসার কাঙাল হয়।

কর্কট রাশি : কর্কট রাশির অধিপতি গ্রহ চন্দ্র। কর্কট রাশির জাতক জাতিকারা অত্যন্ত স্নেহশীল হয়। মায়া মমতায় ভরপুর। মায়ের মতো সবাইকে সামলে রাখার মানসিকতা থাকে।
সিংহ রাশি : সিংহ রাশির অধিপতি গ্রহ রবি। সিংহ রাশির জাতক জাতিকার মধ্যে আত্মসম্মান বোধ অত্যন্ত বেশি থাকে। গুরু গম্ভীর স্বভাবের হয়। কোনো কিছুর সাথে সহজে আপোস করতেচায় না। নিজের কথাই কথা। চাল চলন কথাবার্তায় দাম্ভিকতার প্রকাশ পায়।
কন্যা রাশি : কন্যা রাশির অধিপতি গ্রহ বুধ। কন্যা রাশির জাতক জাতিকার মধ্যে একটা মেয়েলি আচরণ লক্ষ করা যায়। জাতকদের মধ্যেও এই ধরনের আচরণ লক্ষ করা যায়। মন মানসিকতা খুব ভালো হয়। এরা সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ হয়।
তুলা রাশি : তুলা রাশির অধিপতি গ্রহ শুক্র। তুলা রাশির জাতক জাতিকারা অত্যন্ত সৌখিন প্রকৃতির হয়। বিলাস বহুল জীবন কাটাতে পছন্দ করে। অত্যন্ত রুচিশীল। নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে পছন্দ করে। খুবই ভদ্র ব্যবহার। এরা প্রেমের পূজারী।
বৃশ্চিক রাশি : বৃশ্চিক রাশির অধিপতি গ্রহ মঙ্গল। বৃশ্চিক রাশির জাতক জাতিকার মধ্যে সব সময় একটা মানসিক অস্থিরতা চলতে থাকে। মনের মধ্যে সব সময় একটা হতাশা ভাব। এদের মধ্যে খুব বেশি মাত্রায় প্রতিশোধ স্পৃহা বর্তমান থাকে। ধনু রাশির অধিপতি গ্রহ বৃহস্পতি।
ধনু রাশি : ধনু রাশির অধিপতি গ্রহ বৃহস্পতি। ধনু রাশির জাতক জাতিকারা সৎ এবং ধার্মিক প্রকৃতির হয়। এরা খুব জ্ঞানী হয়। ধীর, স্থির, শান্ত প্রকৃতির, খুবই ভদ্র।

মকর রাশি : মকর রাশির অধিপতি গ্রহ শনি। মকর রাশির জাতক জাতিকারা অত্যন্ত ন্যায়প্রিয় হয়। এরা কিছুটা খুঁতখুঁতে স্বভাবের। অন্যকে সন্দেহ করার প্রবণতা থাকে। সাধারণত এরা সৎ প্রকৃতির মানুষ হয়।
কুম্ভ রাশি : কুম্ভ রাশির অধিপতি গ্রহ শনি। কুস্ত রাশির জাতক জাতিকারা ধীর, স্থির, সৎ প্রকৃতির মানুষ হয়। এরা কিছুটা অলস প্রকৃতির। খুব ভালো মনের মানুষ। নিঃস্বার্থ ভাবে পরের উপকার করতে পছন্দ করে।
মীন রাশি : মীন রাশির অধিপতি গ্রহ বৃহস্পতি। মীন রাশির জাতক জাতিকারা খুব জ্ঞানী হয়। এরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান। সৎ এবং ধার্মিক প্রকৃতির মানুষ। এরা খুব পরোপকারী মানুষ। পরের উপকারে এরা এগিয়ে আসে।
কোন রাশির জাতক জাতিকা প্রেমিক প্রেমিকা হিসাবে কেমন, সেটা নিয়ে খুব সাধারণ ভাবে আলোচনা করা হল। একজন মানুষকে ভালোভাবে জানতে হলে বিস্তারিত ভাবে তার জন্মছক বিচার করে দেখা প্রয়োজন। প্রেমিক প্রেমিকার অবশ্যই জানা প্রয়োজন। প্রেমের ক্ষেত্রে নিজের সাথে প্রেমিকা অথবা প্রেমিকের মিল কেমন হবে, ভবিষ্যতে সম্পর্ক কেমন হবে, জানা অত্যন্ত প্রয়োজন। ওটাকেই বলে যোটক বিচার। শুধু আবেগে ভেসে গেলে পরে তার পরিণতি ভালো নাও হতে পারে। আজকাল প্রেমের ক্ষেত্রে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটতে শোনা যায়। তাই আগে থেকেই সতর্ক হয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

১৪৩২ বার্ষিক নক্ষত্রফল
শ্রী গোবিন্দ শাস্ত্রী
(হস্তরেখা ও বাস্তু বিচারক)
অশ্বিনী নক্ষত্র : এই নক্ষত্রের প্রতীক ঘোড়ার আকৃতি বিশিষ্ট। এর অধিপতি বৃহস্পতি। মঙ্গল গ্রহের তেজস্বীতা এর মধ্যে বর্তমান। এর মেষে অবস্থান।
বর্তমান বছরে শরীর স্বাস্থ্য ভালো যাবে না। অর্থনৈতিক ভাবে মধ্যম অবস্থা। আয়-ব্যয়ের সমতা বজায় থাকবে। নতুন কর্মসংস্থান হতে পারে। দাম্পত্য জীবনে শান্তি বিঘ্নিত হবে। শিক্ষানুরাগীরা নতুন সন্ধান পেতে পারেন।
ভরণী নক্ষত্র : যম দেবতা, অধিপতি মঙ্গল। মেষ রাশিতে অবস্থিত।
বর্তমান বর্ষে অর্থনৈতিক অবস্থান বেশ সুখকর এমনকী হঠাৎ কোনো প্রাপ্তির যোগ দেখা যায়। কর্মযোগ প্রবল। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। শরীর-স্বাস্থ্য মধ্যম, অবশ্য যাদের জন্ম কুণ্ডলীতে শনি মঙ্গল একত্রে এবং সেখানে যদি কোনো পাপগ্রহ বিরাজ করে তবে দেহে অস্ত্রোপচারের সম্ভাবনা থেকেই যায়। দাম্পত্য জীবন সুখকর নয়। যোটক বিচার করে বিবাহ করা শ্রেয়।
কৃত্তিকা নক্ষত্র : এর প্রতীক ক্ষুরের আকৃতি। অর্থাৎ জাতক বা জাতিকা ক্ষুরধার বুদ্ধি সম্পন্ন, বুদ্ধিমান। মেষ রাশিতে অবস্থান, অধিপতি বুধ গ্রহ। এখানে সামান্য আধিপত্য থাকে মঙ্গল গ্রহের। এই নক্ষত্রের সঙ্গে বৃহস্পতি শনি যদি তুষ্ট স্থানে বিরাজ করে তবে এরা প্রসিদ্ধ ডাক্তার হতে পারে।
বর্তমান বর্ষে এদের প্রভূত উন্নতির যোগ দেখা যায়। প্রভূত সুযোগ আসবে ব্যবসায়ী বা চাকরিজীবীদের সামনে। আর্থিক অবস্থা বেশ ভালোই বলা যায়। স্বাস্থ্যের জন্য খাদ্যাভাসে পরিবর্তন করলে শুভফল লাভ হবে। বিবাহিত জীবন সুখকর নয়।
রোহিনী নক্ষত্র : প্রতীক শকটচিত্র অর্থাৎ কাঠ দ্বারা নির্মিত গাড়ি। অধিপতি রবি, ব্রহ্মা এর দেবতা। কৃত্তিকার শেষ অংশসহ এই নক্ষত্র বৃষ রাশিতে অবস্থান করে।

বর্তমান বর্ষে আয় ব্যয়ের সমতা বজায় থাকবে। কর্মে সাফল্য আসবে। প্রশাসনিক কর্মে লিপ্ত ব্যক্তিদের প্রভুত উন্নতি হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে বিদেশ যাত্রার যোগ দেখা যায়। দাম্পত্য জীবন সুখকর নহে। ব্যবসায়ীরা নতুন কোনো উদ্যোগ নিতে পারেন। শিক্ষার্থীদের ভালো সুযোগ আসবে। আর্থিক অবস্থান ভালো। শরীর মধ্যম প্রকার। যদি শরীরের প্রতি লক্ষ রেখে চলেন তবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে।
মৃগশিরা নক্ষত্র : হরিণের প্রকৃতি এই নক্ষত্রে বিরাজমান। অর্থাৎ সদাই চঞ্চলমতি। এর অধিপতি শুক্র। ভীষণভাবে কল্পনা প্রবণ।
এই বছরে অধিক আয়, ব্যয় সামান্য। ফলে ভালো সঞ্চয় হবে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য মিলবে। পেশাদারদের একাধিক সুযোগ আসবে। কর্ম প্রার্থীদের কর্ম যোগ যোগ প্রবল। আর্থিক সফলতা বজায় থাকবে। এমনকী লটারী জাতীয় কোনো খেলা থেকে অর্থ প্রাপ্তির যোগ দেখা যায়। এদের দাম্পত্য জীবন সুখকর নয়। একাধিক বিবাহ অসম্ভব নয়। শরীর ভালো থাকলেও উদরপীড়া কষ্ট দেবে।
আর্দ্রা নক্ষত্র : এই নক্ষত্রের প্রতীক হল একফোঁটা চোখের জল। অধিপতি গ্রহ শনি।
বালকোচিত ভাব। আত্মিক ব্যাপারে সফলতা চোখে পড়ার মতো হবে। এর জন্য পারিপার্শিক ব্যক্তিদের চক্ষুশূল হতে পারেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে অস্ত্রোপচার হতে পারে। গবেষণার কারণে বিদেশ যাত্রার যোগ আছে। দাম্পত্য জীবন মধ্যম প্রকার। যারা যোটক বিচার করে বিবাহ করেছে বা করবে তারা সুখী জীবন যাপন করবে। কোনো নিকট আত্মীয়ের বিয়োগ ব্যথায় কাতর হবেন বর্তমান বর্ষে।

পুনর্বসু নক্ষত্র : এই নক্ষত্রের প্রতীক হল বাণ রাখার আধার। এর অধিপতি চন্দ্র। এই নক্ষত্রের বৈশিষ্ট্য পুনরায় ফিরে আসা।
বর্তমান বর্ষে আর্থিক অবস্থার প্রভূত উন্নতি ঘটবে। কর্মক্ষেত্রে উন্নতি হবে। যারা অভিনয় জগতে আছেন তাদের ক্ষেত্রে বর্ষটি খুব শুভ। ব্যবসায়ীদের নতুন ব্যবসায়ের সন্ধান মিলবে। দাম্পত্য জীবন শুভ। শরীর মধ্যম প্রকার। চক্ষু পীড়া, উদর পীড়ায় কষ্টভোগ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে বিবাহ যোগ প্রবল।
পুষ্যা নক্ষত্র : এই নক্ষত্রের প্রতীক হল দুগ্ধবতী গাভী। এর অধিপতি বৃহস্পতি। ভোগ, প্রাচুর্য, সম্পদ এবং গুরুগিরি, মন্ত্রিত্ব ইত্যাদি গুণাবলি এই নক্ষত্রে বিরাজমান।
বর্তমান বর্ষে এদের প্রভূত লাভ হবে বলা যায়। আর্থিক ক্ষেত্র শুভ। গবেষণায় সম্মান লাভ। এবং শিক্ষা ক্ষেত্র বেশ সুখকরই বলা যায়। শরীর-স্বাস্থ্য ভালো যাবে না। চক্ষু, উদরপীড়ায় কষ্ট হবে। দাম্পত্য জীবন ভালো থাকবে।
অশ্লেষা নক্ষত্র : এই নক্ষত্রের প্রতীক হল কুন্ডলী পাকানো সাপ। এর অধিপতি শনি। এই নক্ষত্রের জাতক বা জাতিকাদের স্বভাব সাপের মতো অর্থাৎ কথাবার্তায় বিষের জ্বালা, চালচলনে কুটিলতা ইত্যাদি।
বর্তমান বর্ষে সংযত আচরণ না করলে পদে পদে সম্মান হানির যোগ আছে। আর্থিক সফলতা থাকলেও মামলা-মোকদ্দমা অথবা অহেতুক কারণে অর্থ ব্যয় হওয়ার সম্ভাবনা। দাম্পত্য জীবনে বিবাহ বিচ্ছেদ অসম্ভব নয়। ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দেবে। শরীর খুব একটা ভালো যাবে না। হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনায় শয্যাশায়ী হতে পারেন।
মঘা নক্ষত্র : রাজসিংহাসন হল এর প্রতীক। অধিপতি মঙ্গল গ্রহ। রাজা-মহারাজাদের মতো এদের চালচলন।
বর্তমান বর্ষে অনেক সুযোগ হাতছাড়া হবে। হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকলে সাফল্য আসবে। আর্থিক অবস্থান সুখকর হলেও অবহেলায় অনেক সম্পদ নষ্ট হবে। দাম্পত্য জীবন সুখকর নয়। একাধিক বিবাহও অসম্ভব নয়। ব্যবসায়ীরা সাফল্য লাভ করবে। শরীর ভালো যাবে না। উদর পীড়ায় কষ্টভোগ হবে।
পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্র : এই নক্ষত্রের প্রতীক হল দোদুল্যমান শয্যা। অর্থাৎ দূর ভ্রমণকারী যানবাহনের বিছানা, যেমন—ট্রেন, বাস, জলযান ইত্যাদি।
এই বছরে এদের মানসিক শান্তির অভাব ঘটবে। জীবন যুদ্ধে প্রায়শই হতাশ হতে হবে। অভিনয় জগতে যারা কাজ করে তাদের আর্থিক সফলতা এলেও মন ভালো থাকবে না। কর্মস্থানে বিভ্রাট দেখা যাবে। উচ্চ শিক্ষায় বাধা থাকবে। দাম্পত্য জীবনে হতাশা আসবে। শরীর বিশেষ করে নিম্নাংশে আঘাত লাগতে পারে। অবশ্য সতর্কতা অবলম্বন করলে ক্ষতির আশঙ্কা কম থাকে।
উত্তর ফাল্গুনী নক্ষত্র : এর প্রতীক হল স্থির বিছানা। অধিপতি রবি। অন্ধকার দূর করে আলো দেখানোই এর কাজ। উদারতা, দয়া-দাক্ষিণ্য, বিপন্নকে উদ্ধার করা এই নক্ষত্রের মূল মন্ত্র।
বর্তমান বর্ষ এই নক্ষত্রের জাতক জাতিকাদের সুখকর হবে। কর্মের যোগ প্রবল। আর্থিক সুরাহা হবে। ব্যবসায়ীরা সাফল্য লাভ করবে। প্রশাসনিক দায়িত্বের কাজ যারা করেন তাদের উন্নতির যোগ দেখা যায়। শিক্ষাবিদদের নানা সুযোগ আসবে।
হস্তা নক্ষত্র : মুষ্ঠিবদ্ধ হাত এই নক্ষত্রের প্রতীক। অধিপতি বৃহস্পতি। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৗঁছানোর জন্য সব কিছু হাতের মুঠোয় আনাই হল এই নক্ষত্রের উদ্দেশ্য।
বর্তমান বর্ষে যারা কারিগরি বিদ্যায় পারদর্শী তাদের কর্মযোগ প্রবল। ব্যবসায়ীরা নতুন ব্যবসায় সাফল্য পেতে পারেন। অভিনয় বা পেশাদারিত্বে শুভ ফললাভ হবে। দাম্পত্য জীবনে শান্তি বিঘ্নিত হবে। শরীর-স্বাস্থ্য মধ্যম প্রকার। অবশ্য চক্ষু পীড়া, উদর পীড়ায় কষ্ট ভোগ করতে হবে।
চিত্রা নক্ষত্র : এই নক্ষত্রের প্রতীক হল সাপের মাথার মণি। রাশ্যাধিপতি বুধ গ্রহ। শৈল্পিক উৎকর্ষতা, উদ্ভাবনী শক্তি, কারুকার্যের নিপুণতা এই নক্ষত্রেকে সুখের সাগরে ভাসতে সাহায্য করে।
বর্তমান বর্ষে জাতক জাতিকাদের প্রভূত শুভ ফল লাভ হবে। কর্মযোগীরা কর্ম লাভ করবে। ব্যবসায়ীরা সাফল্য লাভ করবে। শিল্প জগতের সাথে যুক্ত ব্যক্তিরা যথাযোগ্য সম্মান পাবে। বিদ্যার্থীরা পরীক্ষার শুভ ফল লাভ করবে। দাম্পত্য জীবন সুখকর বলা যায়। শরীর-স্বাস্থ্য মাঝে মধ্যে চিন্তায় ফেলবে।
স্বাতী নক্ষত্র : ঝড়ো বাতাস এই নক্ষত্রের প্রতীক। অধিপতি চন্দ্র।
বর্তমান বর্ষে এই নক্ষত্রের জাতক জাতিকাদের উচিত হবে হঠকারি সিদ্ধান্ত থেকে সর্বদাই বিরত থাকা। চাকরিজীবীদের কর্ম পরিবর্তনের যোগ প্রবল। যারা শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত তারা সংযত না হলে কর্মচ্যুতি অসম্ভব নয়। দাম্পত্য জীবনে শান্তি বিঘ্নিত হবে। শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক অর্থ ব্যয় হবে।
বিশাখা নক্ষত্র : সিংহদ্বার এই নক্ষত্রের প্রতীক এবং অধিপতি হল বুধ। যেন তেন প্রকারে কর্ম সিদ্ধিই হল এই নক্ষত্রের মূল মন্ত্র।
বর্তমান বছরে এদের জীবনে চরম বাধা এলেও সাফল্য অনিবার্য। যেসব ব্যবসায়ীরা তরল ব্যবসায় যুক্ত তারা চরম সফলতা লাভ লাভ করবে। চাকরিজীবীদের কর্ম পরিবর্তন যোগ। প্রশাসনিক পদে কর্মরতদের প্রভূত উন্নতি হবে। দাম্পত্য জীবনে নানা অশান্তি থাকবে। শরীরে অস্ত্রোপচার হবার সম্ভবনা প্রবল।
অনুরাধা নক্ষত্র : সুন্দর, মনোরম সুসজ্জিত দ্বার এর প্রতীক। অধিপতি বুধ। রক্ষণাবেক্ষণকারী, প্রহরী এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা এদের লক্ষ্য।
বর্তমান বর্ষে এই নক্ষত্রের প্রভূত উন্নতির যোগ দেখা যায়। চাকরিজীবীদের পদোন্নতির যোগ প্রবল। ব্যবসায়ীরা নতুন কোনো ব্যবসায় সাফল্য লাভ করবে। ছাত্র ছাত্রীদের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফলতা আসবে। দাম্পত্য জীবন সুখকর নয়। শরীর ভালো যাবে না।
জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র : যোদ্ধাবেশে বীরপুরুষ হল এর প্রতীক। অধিপতি শনি। যশ, গৌরব, ঐশ্বর্য ও প্রতিভায় শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার এই নক্ষত্র।
বর্তমান বর্ষে যেকোনো প্রতিযোগিতায় সাফল্য আসবেই। গবেষণামূলক কাজে যারা যুক্ত তাদের যথাযোগ্য সম্মান লাভ হবে। চাকরিজীবীদের সাফল্য আসবে। দাম্পত্য কলহে শান্তি বিঘ্নিত হবে। শরীর স্বাস্থ্য ভালো যাবে না।
মূলা নক্ষত্র : একগুচ্ছ শিকড় এই নক্ষত্রের প্রতীক। অধিপতি শনি।
বৈদ্য, চিকিৎসক অথবা ওষুধজাত ব্যবসায় যুক্ত এই নক্ষত্রের ব্যক্তিত্ব। এই নক্ষত্র জননেতা হতে সাহায্য করবে। অর্থাৎ দশ জনের একজন হতে সাহায্য করবে। চাকরিপ্রার্থীরা চাকরি লাভ করবে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা উৎপাদন শিল্পে যুক্ত তাদের সাফল্য আসবে। পেশাদারদের উন্নতি অব্যাহত থাকবে। আর্থিক সফলতা আসবে। বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনা। শরীরে অস্ত্রোপচারের সম্ভাবনা আছে।
পূর্বাষাঢ়া নক্ষত্র : তালপাতার পাখা এর প্রতীক চিহ্ন। অপরাজেয় মনোভাব, বিপদে অটল, দয়া-মায়া-ক্ষমা এর মধ্যে বিরাজমান।
বর্তমান বর্ষে এদের প্রভূত উন্নতি হবে। শিল্প জগতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা সম্মানের উচ্চ শিখরে পৗঁছবে। চাকরিপ্রার্থীরা কর্ম লাভ করবে। ব্যবসায় সাফল্য আসবে। দাম্পত্য জীবন সুখকর নয়। শরীর খুব একটা ভালো যাবে না।
উত্তরাষাঢ়া নক্ষত্র : বিশ্বজগতের গণদেবতাই হল এর প্রতীক। অধিপতি রবি। চিত্রকর, কলাবিদ্যা, জাদুকর, মল্লযোদ্ধা, ত্যাগী, যজ্ঞকারী ও ভাবপ্রবণ এই নক্ষত্র।
বর্তমান বর্ষে পেশাদার, শিল্পকলার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের প্রভূত উন্নতির যোগ। ব্যবসায়ীরা একাধিক ব্যবসায় যুক্ত হয়ে প্রভূত লাভ করবে। জাদুবিদ্যায় খ্যাতি ছড়িয়ে পড়রে সারা দেশে। দাম্পত্য জীবনে শান্তি বিঘ্নিত হবে। অস্থি ভঙ্গের যোগ দেখা যায়।
শ্রবণা নক্ষত্র : ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর এঁদের পদচিহ্নই হল এই নক্ষত্রের প্রতীক। শাস্ত্রবিদ, শিক্ষাবিদ, ভাষাবিদ, লোকশিক্ষা প্রদানকারী তথা ভাবপ্রবণ এই নক্ষত্র।
বর্তমান বর্ষে এদের নানা বাধা বিঘ্নের মধ্য দিয়েই সাফল্য আসবে। চাকরিজীবীদের উন্নতি হবে। ব্যবসায়ীরা সাফল্য লাভ করবে। শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা যথাযথ সম্মান পাবেন। বিশেষ প্রতিভার জন্য যশ লাভ হবে। দাম্পত্য জীবন সুখকরই বলা যায়। শরীর স্বাস্থ্য বেশ ভালো থাকবে তবে উদরপীড়ায় কষ্ট ভোগ হবার সম্ভাবনা।
ধনিষ্ঠা নক্ষত্র : ঢোল (বাদ্যযন্ত্র) এর প্রতীক চিহ্ন। অধিপতি শনি। অষ্টবসুর গুণাবলী এই নক্ষত্রে বিরাজমান।
বর্তমান বর্ষে হাজারো ঝামেলা পোহাতে হবে। পেশাগত কারণে বিদেশ যাত্রার যোগ আছে। কর্মযোগীদের কর্মে বাধা আসবে। ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনায় সাফল্য আসবে। দাম্পত্য জীবনে নামা ঝামেলা সহ্য করতে হবে। শরীর স্বাস্থ্যের কারণে কষ্ট ভোগ হবে।
শতভিষা নক্ষত্র : এই নক্ষত্রের প্রতীক হল বৃত্ত। অধিপতি শনি।
এই নক্ষত্রের জাতক বা জাতিকাদের বর্তমান বর্ষে শুচিবায়ুগ্রস্ত মনোভাব বৃদ্ধি পাবে। পারিবারিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। চাকরিজীবীদের পরিবর্তন যোগ প্রবল। ব্যবসায় সাফল্য বিলম্বিত হবে। নতুন ব্যবসায় বাধা আসবে। জলযানের ব্যবসায় সাফল্য আসবে। ছাত্রছাত্রীদের গবেষণামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদের সম্ভাবনা প্রবল। শরীরে নানা রোগের আধিক্য লক্ষ করা যায়।
পূর্বভাদ্রপদ নক্ষত্র : কথায় বলে দু-মুখো, এই দু’ মুখো মানুষের প্রতীক হল এই নক্ষত্র। অধিপতি শনি এবং বৃহস্পতি। অর্থাৎ শনির ভাব ও বৃহস্পতির ভাব মিলিত হয়ে এই নক্ষত্র পরিচালিত হবে। কটুভাষী, নিষ্ঠুর, অবিবেচক হয় এই নক্ষত্র।
এই নক্ষত্রজাত ব্যক্তিদের বর্তমান বর্ষ সুখকর হবে না। চাকরিজীবীদের কর্মচু্যতি হতে পারে। ব্যবসায় প্রভূত ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। কারণে অকারণে সম্মানহানি হওয়ার যোগ। দাম্পত্য জীবনে শান্তি বিঘ্নিত হবে। শরীরের কোনো অংশে আঘাত লেগে অবশ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
উত্তর ভদ্রপদ নক্ষত্র : খাট বা শেষ শয্যা হল এর প্রতীক। অধিপতি হল বৃহস্পতি। এদের সন্ন্যাসী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
বর্তমান বর্ষে এই নক্ষত্রের জাতক বা জাতিকাদের প্রভূত ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। কর্মে পরিবর্তন যোগ লক্ষ করা যায়। ব্যবসায়ীরা সুপ্রতিষ্ঠিত হতে সক্ষম হবেন। জননেতাদের মান সম্মান বৃদ্ধি পারে। দাম্পত্য জীবন বেশ সুখকর। শরীর স্বাস্থ্য বেশ ভালোই যাবে। অবশ্য চোখ, কান, নাক ইত্যাদি নিয়ে বিশেষ কষ্ট ভোগ হবে।
রেবতী নক্ষত্র : প্রতীক হল পালন কর্তা। কাজ অপরকে লালন পালন করা। অধিপতি হল বৃহস্পতি। এরা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের নির্মাতা অথবা কর্মকর্তা হয়ে মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করে। সত্য, ন্যায় ও নিষ্ঠার পথে চলে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে। দাম্পত্য জীবন বেশ সুখকর বলা যায়। শরীর বেশ ভালোই যাবে।
পরিশেষে বলব নক্ষত্রের দোষ গুণ যাই থাকুক। মনের দৃঢ়তা রেখে যদি আপন লক্ষ্যে পৗঁেছানোর জন্য সত্যের পথে অবিচল থেকে এবং দেব-দ্বিজে, পিতা-মাতা সহ গুরুজনদের আর্শিবাদ পাথেয় করে এগিয়ে গেলে লক্ষ্য বস্তুতে পৗঁছতে কোনো বাধাই চলার পথকে পিচ্ছিল করতে পারবে না।
